সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আরও একবার পিছিয়ে আগামী ১১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নিয়ে মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ মোট ১১৯ বার পেছানো হলো, যা জনমনে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত এই নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। এদিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও, তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করতে ব্যর্থ হয়।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। হত্যাকাণ্ডের সময় তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ বাসায়ই ছিল।
হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। প্রাথমিকভাবে শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। পরবর্তীতে তদন্তের দায়িত্ব ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলে তদন্তভার র্যাবের কাঁধে আসে। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে র্যাব এই মামলার তদন্ত করে আসছিল।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত র্যাবের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব সরিয়ে নেয়। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এক আদেশে জানায়, সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত এখন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গঠিত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স করবে। গত ২৩ অক্টোবর উচ্চ আদালতের নির্দেশে চার সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করে সরকার, যার আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান।
এই মামলার আসামিরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল ইসলাম ওরফে অরুন, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাড়ির দুই নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনায়েত আহমেদ, এবং তাদের বন্ধু তানভীর রহমান খান। আসামিদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ বর্তমানে জামিনে রয়েছেন এবং বাকিরা কারাগারে আটক আছেন।
১১৯ বারের মতো প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানো এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছে। নিহত সাংবাদিক দম্পতির পরিবার ও সহকর্মীরা দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখতে চান।