ঢাকা:
এক সময়ের অসহায় আর সংগ্রামী এক তরুণ রাতুল, আজ নতুন জীবনের পথে এগিয়ে চলেছে। তার এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহযোগিতা। দীর্ঘদিনের শারীরিক ও মানসিক সংকট পেরিয়ে রাতুল আজ সুস্থ জীবনের পথে হেঁটে চলেছে।
রাতুলের গল্প আসলে বাংলাদেশের হাজারো তরুণের গল্প। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়ে সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যে বেড়ে ওঠা, স্বপ্ন পূরণের পথ খুঁজতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া এবং শেষমেশ এক শুভাকাঙ্ক্ষীর হাত ধরে নতুন করে বেঁচে ওঠার কাহিনীই রাতুলের জীবনের অনুপ্রেরণা।
শৈশবের কষ্টের দিনগুলো
রাতুলের জন্ম নোয়াখালীর একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। বাবা ছিলেন দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে ছিল দারিদ্র্যের ছাপ। ছোটবেলায় পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ থাকলেও অভাবের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর আর পড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। অল্প বয়সেই পরিবারের হাল ধরতে শুরু করে রাতুল। দিনমজুরের কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছোটখাটো কাজে জড়িয়ে পড়ে সে।
কিন্তু জীবনের এই সংগ্রামের মাঝেই হঠাৎ একদিন বড় অসুস্থ হয়ে পড়ে রাতুল। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল সাধারণ জ্বর, কিন্তু পরে জানা যায় এটি গুরুতর অসুখ। চিকিৎসার অভাবে ধীরে ধীরে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে থাকে সে।
চিকিৎসার অভাবে হতাশা
বাংলাদেশের গ্রামীণ স্বাস্থ্যব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা রাতুলের জীবনকে আরও সংকটে ফেলে দেয়। অর্থাভাবে চিকিৎসা অসম্ভব হয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিলেও সহযোগিতা পাননি। দিন দিন শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে রাতুল নিজেও হতাশ হয়ে পড়ে। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ হয়ে যায়, এমনকি ভবিষ্যতের প্রতি সব আশা হারিয়ে ফেলে।
সহায়তার হাত বাড়ান তারেক রহমান
এই অবস্থায় খবর পৌঁছে যায় লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। তিনি রাতুলের অসুস্থতার খবর শুনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়ান। শুধু অর্থ দিয়ে নয়, তিনি চিকিৎসা ব্যবস্থা, হাসপাতাল সংযোগ এবং মানসিক শক্তি যোগানোর দিক থেকেও রাতুলকে সহায়তা করেন।
তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রাতুলের পাশে দাঁড়ান। তাকে ঢাকায় এনে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার পর ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে ফিরে আসে রাতুল।
চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সাহস
চিকিৎসার জন্য টাকা-পয়সা অবশ্যই জরুরি ছিল, কিন্তু তার চেয়েও বেশি দরকার ছিল মানসিক সাহস। তারেক রহমান রাতুলকে বারবার বার্তা পাঠিয়েছেন—
“তুমি হার মানবে না, জীবন সুন্দর, তুমি লড়াই চালিয়ে যাও।”
এই কথাগুলো রাতুলকে নতুন করে বাঁচার শক্তি দেয়।
চিকিৎসকরা জানান, শুধু ওষুধ নয়, রোগীর মানসিক দৃঢ়তাও সুস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাতুল সেই শক্তি পেয়েছে তারেক রহমানের উৎসাহ থেকে।
নতুন জীবনের পথে যাত্রা
চিকিৎসা শেষ করে যখন রাতুল বাড়ি ফিরে যায়, তখন সে আগের সেই হতাশাগ্রস্ত তরুণ আর নেই। তার চোখেমুখে নতুন আলো, নতুন স্বপ্ন। সে এখন সুস্থ শরীর ও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নিজের জীবন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
বর্তমানে রাতুল স্থানীয়ভাবে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করেছে। পাশাপাশি সে সমাজের অসুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চায়। তার কথায়—
“আমি জানি অসহায়ত্ব কাকে বলে। আমি জানি চিকিৎসার অভাবে কষ্ট কাকে বলে। তাই আমি চাই, ভবিষ্যতে যদি কারও পাশে দাঁড়াতে পারি, তবে সেটাই হবে আমার জীবনের বড় অর্জন।”
জনমানসে তারেক রহমানের ভাবমূর্তি
রাতুলের এই ঘটনাটি শুধু একটি ব্যক্তিগত গল্প নয়, এটি জনমানসে তারেক রহমানের ইতিবাচক ভাবমূর্তিকে আরও সুদৃঢ় করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, তিনি শুধু রাজনীতির মাঠেই নয়, মানবিক কাজেও এগিয়ে আসেন। সাধারণ মানুষের কষ্ট অনুভব করেন, সুযোগ পেলেই সহযোগিতার হাত বাড়ান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, তারেক রহমানের এই ধরনের মানবিক পদক্ষেপ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করছে। তারা ভাবছে— রাজনৈতিক নেতারা শুধু ক্ষমতার জন্য লড়াই করেন না, জনগণের দুঃখ-দুর্দশায়ও সাড়া দেন।
সমাজে ইতিবাচক প্রভাব
রাতুলের সুস্থ হয়ে ওঠা কেবল তার নিজের জীবনে নয়, তার পরিবার এবং আশেপাশের সমাজেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তার পরিবার নতুন করে আশা খুঁজে পেয়েছে। গ্রামের অন্যান্য তরুণরাও অনুপ্রাণিত হয়েছে— জীবনে যত কষ্টই আসুক, চেষ্টা করলে জয় করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের গল্পগুলো সমাজে একটি “চেইন রিঅ্যাকশন” তৈরি করে। একজন মানুষ সুস্থ হলে বা বাঁচলে আশেপাশের আরও অনেকে অনুপ্রাণিত হয়।
রাতুলের কণ্ঠে কৃতজ্ঞতা
রাতুল সবসময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তারেক রহমানের প্রতি।
“তিনি না থাকলে হয়তো আজ আমি বেঁচে থাকতাম না। তিনি আমাকে শুধু চিকিৎসা দেননি, আমাকে বাঁচার নতুন মানসিক শক্তি দিয়েছেন। আমার পরিবারের মানুষগুলোকে স্বপ্ন দেখার সুযোগ দিয়েছেন।”
উপসংহার
একজন তরুণের অসুস্থতা থেকে সুস্থতার পথে ফিরে আসার এই কাহিনী আসলে মানবতার জয়গান। রাতুলের জীবনে তারেক রহমান যে অবদান রেখেছেন, তা নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। রাজনীতির বাইরে এসে একজন রাজনৈতিক নেতা যদি সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান, তবে সেটি সমাজের জন্য এক বিরাট ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
আজ রাতুল সুস্থ জীবনের পথে। তার চোখে নতুন আলো, মুখে নতুন হাসি। তার এই হাসির পেছনে রয়েছে তারেক রহমানের সহায়তা— যা শুধু একজন মানুষের জীবন বাঁচায়নি, বরং একটি সমাজকে দেখিয়েছে আশার নতুন দিগন্ত।