পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় দুই বছরের অসুস্থ ছেলের গলায় ছুরি ধরে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভয়াবহ এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে চার জনকে গ্রেফতার করে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিত নারী। এরপরই জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে, সদর উপজেলার তিন মাইল সুরিভিটা এলাকার একটি চা বাগানসংলগ্ন স্থানে।
জানা যায়, ওই গৃহবধূ অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে ইজিবাইকে করে বাবার বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে এক পরিচিত ইজিবাইকচালক নাম ধরে ডাক দিলে তিনি থামেন। তখন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছয় যুবক তাঁকে রাস্তার পাশের নির্জন চা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তার দুই বছরের ছেলের গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে একে একে ধর্ষণ করে ছয়জন।
ধর্ষণের পর নির্যাতিতা নারী অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে রাস্তার ধারে ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা তাকে পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মা ও শিশুকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ জানায়, এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলো:জনি ইসলাম (২৭),বিপ্লব হোসেন (২৫),মকছেদুল ইসলাম (৩৩),সাদেকুল ইসলাম
তাদের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল বাজার ও সাতমেড়া ইউনিয়নে। আরও দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও তারা পলাতক রয়েছে।
হাসপাতালের বেডে কাতরাতে কাতরাতে ভুক্তভোগী নারী বলেন,‘আমার ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল তারা। আমি চিৎকার করতে পারিনি, ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমার পরিচিতরাই এমন পাশবিক কাজ করেছে। এখন উল্টো আমার আত্মীয়-স্বজন আপোষের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি কোনো আপোষ চাই না, দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন,‘৯৯৯-এ ফোন পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। অচেতন অবস্থায় নারী ও শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগীর জবানবন্দির ভিত্তিতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। নারীটির স্বাস্থ্য পরীক্ষাও প্রক্রিয়াধীন।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. আবুল কাশেম বলেন,
‘পুলিশ অচেতন অবস্থায় নারীটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, পরীক্ষার রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’