দেশের ব্যাংকগুলোতে আমদানি খাতে ডলারের দাম গড়ে ৬০ পয়সা কমেছে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গড়ে প্রতি ডলার বিক্রি করেছে ১২২ টাকা ৪০ পয়সায়। এর আগে বাজারে ডলারের সর্বোচ্চ মূল্য উঠেছিল ১২৩ টাকা পর্যন্ত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দিনের শুরুতে প্রতি ডলারের দাম ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা। পরে তা বেড়ে হয় ১২২ টাকা ৫৫ পয়সা, তবে দিনের শেষে তা আবার নেমে আসে ১২২ টাকা ২৫ পয়সায়। এদিন আন্তঃব্যাংক লেনদেন হয় ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার, যার গড় দাম দাঁড়ায় ১২২ টাকা ৪০ পয়সা।
ডলারের দাম হ্রাসের পেছনে মূল কারণ হিসেবে ব্যাংক খাতে রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি এবং আমদানি দায় পরিশোধে চাপ কমে যাওয়াকে বিবেচনা করা হচ্ছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো শুধুমাত্র আমদানির এলসির দায় পরিশোধ করছে, বকেয়া ঋণ পরিশোধের চাপ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।
গত মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারে ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও বাজারমুখী দাম নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হলেও ডলার নিয়ে কেউ যেন কারসাজি করতে না পারে সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি কার্যক্রম জোরদার করে।
সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় ক্রমাগত বাড়ছে। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশের বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশি হওয়ায় মূল্য কিছুটা কমেছে।
এছাড়াও, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ সহায়তার অর্থ ছাড় পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দামও কমতে শুরু করেছে। গত এক মাসে বৈশ্বিকভাবে ডলারের মূল্য কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ, যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।
ডলারের দরপতনের ফলে দেশের মুদ্রা টাকার মান কিছুটা বেড়েছে। এতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির চাপও এখন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।